সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়
স্কুলে ভর্তি হতে পারবে রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীরা

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের এক ঐতিহাসিক রায়ের ফলে দেশটির রোহিঙ্গা শরণার্থীরা সরকারি স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এতদিন ভারতীয় পরিচয়পত্রের অভাবে এসব শিশু শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। আদালতের রায়ের পর শরণার্থী শিবিরগুলোতে শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। খবর আরব নিউজ
জানা গেছে, ভারতে আনুমানিক ৪০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বাস করছে। যাদের মধ্যে ২০ হাজার জন জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে নিবন্ধিত। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের কারণে পালিয়ে আসা এই জনগোষ্ঠী এতদিন সরকারি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত ছিল।
তবে সুপ্রিম কোর্টের নতুন রায়ে বলা হয়েছে, পরিচয়পত্র না থাকলেও সরকারি স্কুল ও হাসপাতালের সেবা পেতে কোনো বাধা থাকবে না। আদালত স্পষ্ট করেছে, ইউএনএইচসিআর কার্ডধারী শিশুরা সরকারি স্কুলে ভর্তি হতে পারবে এবং যদি কোনও প্রতিষ্ঠান এতে বাধা দেয়, তবে তারা সরাসরি উচ্চ আদালতে প্রতিকার চাইতে পারবে।
হরিয়ানার একটি শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী মোহাম্মদ ইমানুল বলেন, আমরা ভারতে আসার পর থেকেই শিক্ষাবঞ্চিত। সুপ্রিম কোর্টের এই রায় আমাদের ভবিষ্যতের প্রথম ধাপ। এটি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সম্মান পুনরুদ্ধার করবে।
ইমানুল আরও জানান, তার ক্যাম্পের শতাধিক শিক্ষার্থী স্কুল ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল। তবে আদালতের রায়ের পর তারা আবারও ভর্তি হওয়ার আশা দেখছে।
একই শিবিরের আরেক শরণার্থী সাদিক খান জানান, তার মেয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করলেও পরিচয়পত্র না থাকায় তাকে স্কুল ছাড়তে হয়েছিল। নতুন রায়ের পর তিনি মেয়েকে স্কুলে ফেরানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন।
যদিও আদালতের আদেশ কার্যকর হয়েছে, তবে এখনো কোনো সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। ফলে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিয়ে দ্বিধায় থাকতে পারে।
শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করা এনজিও আজাদী প্রজেক্টের পরিচালক প্রিয়ালি সুরি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় অবশ্যই ইতিবাচক, তবে শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। শিশুদের আইনি লড়াই করতে বাধ্য করা উচিত নয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে সরকারি পদক্ষেপ জরুরি। যদি তা কার্যকর হয়, তবে এটি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ উন্নয়নের নতুন দুয়ার খুলে দেবে
পাঠকের মতামত